ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ১০ জনের মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক
২৭ মে, ২০২৪, 7:32 PM
অনলাইন ডেস্ক
২৭ মে, ২০২৪, 7:32 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে ১০ জনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে এ পর্যন্ত ১০ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার (২৭ মে) বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি এ কথা জানান।
তিনি জানান, ১৯ জেলায় ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৫ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সারাদেশে ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি হচ্ছে। এতে উপকূলীয় ছয় জেলায় প্রাণ গেছে ১০ জনের। এর মধ্যে পটুয়াখালীতে তিনজন, ভোলা ও বরিশালে দুইজন করে এবং সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একজন করে মারা গেছেন।
প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী সোমবার (২৭ মে) ভোরে বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় বহুতল ভবনের দেয়াল ধসে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন। পুলিশ জানিয়েছে, চারজন রেস্টুরেন্টে অবস্থান করছিলেন। বাতাসের তীব্রতায় আকস্মিক পাশের চারতলা ভবনের একটি অংশের দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন হোটেল মালিক লোকমান ও কর্মচারী মোকছেদুল। আহত হন কর্মচারী সাকিব। তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
ভোলায় মারা গেছেন শিশুসহ দুজন। এর মধ্যে বসতঘরে চাপা পড়ে মারা যান মনেজা খাতুন নামে এক নারী। তিনি লালমোহন উপজেলার চর উমেদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, রাতে মনেজা খাতুন তার এক নাতিকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। ঝড়ো বাতাসে টিনের ঘর ভেঙে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।
এ ছাড়া জেলার দৌলতখানে ঘর চাপা পড়ে মাইশা (৪) নামে এক শিশু মারা গেছে। শিশুটি দৌলতখান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মনির হোসেনের মেয়ে। জানা যায়, রাতে বাবা-মার সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল শিশু মাইশা। ভোরের দিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালে তাদরে ঘরের পাশে গাছ ভেঙে পড়ে। এতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মাইশার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই পরিবারের আরও তিনজন।
এদিন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল এলাকায় দেয়াল চাপায় মারা যান এক পথচারী। স্থানীয়রা জানায়, ভারী বৃষ্টির সময় একটি দেয়ালের পাশে আশ্রয় নেন সাইফুল ইসলাম হৃদয়। হঠাৎ দেয়ালটি ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস তার মরদেহ উদ্ধার করে।
পটুয়াখালীতে রেমাল’র তাণ্ডবে মারা গেছেন তিনজন। এর মধ্যে দুমকি উপজেলায় ঝোড়ো হাওয়ায় গাছচাপায় জয়নাল হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। জানা গেছে, জয়নাল হাওলাদার উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নলদোয়ানি স্লুইসগেট এলাকার বাসিন্দা।
জেলার বাউফলে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’ মৃত্যু হয়েছে মো. আব্দুল করিম নামে এক পথচারীর। সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকাত মোড়ল নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। ওইদিন বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে প্লাবিত এলাকা থেকে বোন ও ফুফুকে রক্ষা করতে গিয়ে স্রোতে ভেসে প্রাণ হারান শরীফ হাওলাদার নামে এক যুবক।
কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াগাঁও চৌমুহনী এলাকায় নুর আইডিয়াল স্কুলে ক্লাস করার সময় পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন এক ভবনের দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম সাগর (১২) নামে ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২৭ মে) বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আমাদের সময়.কম