তালতলীতে সংবাদ সংগ্রহ গিয়ে ইউপি সদস্যের হামলা শিকার ২ সাংবাদিক
নিজস্ব প্রতিনিধি
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 3:57 PM
নিজস্ব প্রতিনিধি
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 3:57 PM
তালতলীতে সংবাদ সংগ্রহ গিয়ে ইউপি সদস্যের হামলা শিকার ২ সাংবাদিক
বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো.জামাল খানের বিরুদ্ধে একটি স্টিল বডি ট্রলার আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন স্থানীয় দুই সাংবাদিক। গত শনিবার (৩১আগস্ট) রাত ১০ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার দুই সাংবাদিক হলেন- তালতলী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকার তালতলী প্রতিনিধি মো.শাহাদাৎ হোসেন এবং দৈনিক কালবেলা পত্রিকার তালতলী প্রতিনিধি মো.নাঈম ইসলাম।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকে আসামি করে।
হামলার শিকার হওয়া সাংবাদিকরা বলেন, গত শনিবার রাতে নিশানবাড়ী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জামাল খান একটি স্টিল বডি ট্রলার আত্মসাতের চেষ্টা করেছেন বলে খবর পান সাংবাদিকরা।
সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন ও সাংবাদিক নাইম ইসলাম। এ সময় ওই ইউপি সদস্যের বাড়ির সামনেই খালে ট্রলারটি বাধা দেখা যায়।
এ বিষয় ইউপি সদস্য মো.জামাল খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদ সংগ্রহের বাধা দেন। ঘটনা স্থানে তালতলী প্রেসক্লাব ৬-৭ সাংবাদিক ছিলেন। তালতলী প্রেসক্লাবের সভাপতি খায়রুল ইসলাম ইউপি সদস্যকে বলে, তাদের মারধর করে মোবাইল ফোন রেখে দিন ওরা তালতলী উপজেলার হলুদ সাংবাদিক। এরপরে ইউপি সদস্য জামাল খান এবং তালতলী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের নেতৃত্বে তার ভাইয়ের ছেলে ফেরদাউস (২৬) জামাল (৪০) সাংবাদিক খায়রুল ইসলাম আকাশ (৩২) সাংবাদিক মোস্তাফিজ (২৪) সাংবাদিক জলিল (২৮) সাংবাদিক হাফিজুল (২৭) সাংবাদিক মাহামুদুল হাচান(২৮) সহ অজ্ঞত আরো ৬-৭ জন সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, মোবাইল ভাঙচুর করা হয়।
এ সময় ঘটনাস্থানে থাকা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো.বশির বশির উদ্দিন বলেন, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জামাল খানের বিরুদ্ধে একটি চোরাই স্টিল বডি ট্রলার আত্মসাতের খবর পাওয়া যায় আমরা নিদ্রা বাজার এসে ওই চোরাই ট্রলারটি ইউপি সদস্য জামাল খানের বাড়ির সামনে বাধা দেখি। এ সময় তালতলী উপজেলার স্থানীয় এক সাংবাদিককে এ সংবাদ জানাই। পরে ঘটনাস্থনে ১০ থেকে ১২ জনের মতো সাংবাদিক আসে। এক পর্যায়ে চোরাই ট্রলারের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল খানে জানতে চাইলে তিনি গালাগালি শুরু করে সাংবাদিকদের উপর চওড়া হন। পরে তালতলী প্রেসক্লাবের সভাপতি খাইরুল ইসলাম আকাশের নেতৃত্বে অন্য সাংবাদিকের উপর হামলা হয়।
হামলা শিকার হওয়া সাংবাদিক মো.শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা তালতলী উপজেলা প্রেসক্লাবে অবস্থান করি এ সময় নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নিদ্রা বাজার থেকে বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের তালতলী উপজেলার সমনায়ক।মো. বশির উদ্দিন ফোনে জানায় নিদ্রা বাজারে একটি স্টিল বোড চোরাই ট্রলার ইউপি সদস্য আত্মসাৎ করেছেন এ সংবাদ পেয়ে তালতলী উপজেলা প্রেসক্লাব থেকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য সহকর্মীকে মো.নাঈম ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে গেলে। ঘটনা স্থানের তালতলী প্রেসক্লাবের আরো ৬-৭ জন সাংবাদিক দেখা যায়। ট্রলার আত্মসতের কথা জানতে চাইলে তালতলী প্রেসক্লাবের খায়রুল ইসলাম ইউপি সদস্যকে বলে ওরা হলুদ সাংবাদিক তাদের ধরে মোবাইল ফোন রেখে দিন একথা বলার সাথে ইউপি সদস্য জামালসহ তালতলী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা আমাদের উপর হামলা করেন ১৫-১৬ জনের মতো।
এ বিষয়ে আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো.জসিম উদ্দিন বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে তালতলী প্রেসক্লাব সভাপতি খায়রুলকে নিয়ে স্থানীয় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমি এঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের উপর হামলা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।