ঢাকা ২৫ আগস্ট, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বাঁকে বাঁকে মৃত‌্যুফাঁদ তালতলীতে সাঁতার ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা বরগুনায় ৫ লক্ষ টাকার অবৈধ সিগারেট উদ্বার, ২ জনের কারাদন্ড ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অস্বস্তিতে পড়েছিলেন বিদ্যা বালান পুরুষরা কেন আগে প্রেমে পড়ে? গবেষণায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য ইসলামের দৃষ্টিতে প্রতিবাদ করাও ইবাদত তিন দশক পর ট্যারিফ বাড়ল চট্টগ্রাম বন্দরে, খরচ বাড়বে ব্যবসায়ীদের বন্ধ হয়ে গেল ঢাকা-বরিশালের রাষ্ট্রীয় যাত্রীবাহী বিমান আল-জাজিরার অনুসন্ধান ২০২৪ সালের বিক্ষোভে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বাঁকে বাঁকে মৃত‌্যুফাঁদ

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

২৫ জুলাই, ২০২৫,  5:21 PM

news image

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর শাখারিয়া থেকে বান্দ্রা পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার সড়কের এই অংশে ১৭ টি বাঁকে বাঁকে মৃত্যুর মিছিল চলছে। এ মিছিল যেন থামছেই না। প্রতিদিন এ মহাসড়কের কোন না কোন বাঁকে দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রায়ই ভারি হয়ে ওঠে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ। সড়কের বাক ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান চালকরা। কিন্তু দুর্ঘটনা ঠেকাতে সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের ‍উদ্যোগ নেই।  

জানাগেছে, গত জানুয়ারী- জুন পর্যন্ত ছয় মাসে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর ৩৭ কিলোমিটার সড়কে শতাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫০ জন আহত এবং ১০ জন নিহত হয়েছে। আহতদের মধ‌্যে শতাধিক মানুষ পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছে। এ সকল পরিবারগুলো অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে গেছে বলে জানান ভুক্তভোগী দেলোয়ার হাওলাদার। এর মধ্যে গত ২১ জুন মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া বাঁকে ইকরা লাক্সারী পরিবহন ইজিবাইককে চাপা দিলে একই পরিবারের শিশুসহ চারজন নিহত হয়। 

দুমড়ে মুড়ছে গেছে অবৈধ ইজিবাইক। গত ১৩ জুলাই চুনাখালী সেতুতে হিমাদ্রী কুন্ডু নামের একজন মারা গেছে। শনিবার  সকালে মহিষকাটা বাঁক ঘুরতে গিয়ে হানিফ পরিবহন গাড়ী উল্টো সড়কের পাশে পড়ে যায়। এতে ৫ জন আহত হয়েছে। ১১ জুলাই আমতলীর ছুটিকাটা বাঁকে ইমরান পরিবহন, অটো রিক্সা ও্র পিকআপের সংঘর্ষ হয়। ওইদিন রাতে মহিষকাটা বাঁকে ইউনিক ও লাবিবা পরিবহন মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে ইউনিক পরিবহন খাদে পড়ে যায়। কিন্তু এ দুটি দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে কিন্তু কেউ মারা যায়নি। গত পয়েলা জুলাই থেকে শনিবার পর্যন্ত ১৯ দিনে ১২ টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ‌্যে দুইজন মারা গেছে। সড়কের বাঁক ঘুরতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা হচ্ছে।

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী উপজেলার শাখারিয়া থেকে বান্দ্রা ৩৭ কিলোমিটার সড়কের শাখারিয়া, ব্রিকস ফিল্ড, কেওয়াবুনিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, আমড়াগাছিয়া খানকা, ডাক্তার বাড়ী, ঘটখালী, তুলাতলী, একে স্কুল চৌরাস্তা, ছুরিকাটা, মানিকঝুড়ি, খুড়িয়ার খেয়াঘাট, খলিয়ান, কল্যাণপুর ও বান্দ্রা নামক ১৭ টি বাঁকে অহরহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতো দুর্ঘটনা রোধে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুর্ঘটনা কবলিত বাঁকে কার্যকর ব‌্যবস্থা নেয়নি।

চালকরা বাঁক ঘুরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় শিকার হচ্ছে। ২০২৪ সালে এ সকল বাঁকের মধ‌্যে পায়রা ফিলিং ষ্টেশন সংলগ্ন ও ছুরিকাটা বাঁকে  সড়ক ও জনপথ বিভাগ  সড়ক সিগনাল বাতি স্থাপন করেছিল কিন্তু অল্প দিনের মধ‌্যইে নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকে এক বছরের মধ‌্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ওই  বাতি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই।

সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, সড়কের পায়রা ফিলিং স্টেশনের সামনে ও ছুরিকাটা নামক স্থানে সিগনাল লাইট রয়েছে। কিন্তু তার মধ‌্যে একটি অকেজো হয়ে গেছে। এ ছাড়া সড়কের আর কোথায় সিগনাল বাতি নেই। বাঁকে বাঁকে কিছু সিগনাল সাংকেতিক চিহৃ থাকলেও তা অস্পষ্ট। দুর থেকে গাড়ী চালকরা দেখতে পারছে না বলে জানান কয়েকজন চালক জাকির, রাসেল ও মজিবর।

খুড়িয়ার খেয়াঘাট এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, খুড়িয়ার খেয়াঘাটের বাঁকটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ বাঁকটিতে কোন সাংকেতিক চিহ্ন নেই। প্রতিদিন এখানে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে। এ দুর্ঘটনা রোধে বাঁক সংস্কার করে সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা প্রয়োজন।

বিআরটিসি গাড়ী চালক রহমত আলী বলেন, সড়কের বাঁকে বাঁকে সিগনাল বাতি নেই। যাও আছে তা অকেজো। সিগনাল বাতি না থাকায় বাঁকে সড়ক দুর্ঘটনা বেশী ঘটে। তিনি আরো বলেন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বাঁকের শেষ নেই। কিন্তু দুইটি স্থানে সিগনাল বাতি রয়েছে তারও একটি নষ্ট। দ্রুত বাঁকে সিগনাল বাতি স্থাপন করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধের দাবী জানিয়েছেন তিনি।

বরগুনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কুমারেশ বিশ্বাস বলেন, মহাসড়কের বাঁকগুলোর কয়েকটি স্থানে সিগনাল বাতি স্থাপন করা হয়েছে। কিছু বাকী আছে ওইস্থানগুলোতে বাতি স্থাপন করা হলে সমস‌্যা থাকবে না। তিনি আরও বলেন, মুছে যেতে চিহৃ গুলো পুনঃনির্মাণ করা হবে।

বাংলাদেশ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন বরগুনা শাখার সভাপতি সোহেল তানভির  বলেন, অবশ্যই এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক চিহ্নিত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব‌্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব সওজের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সড়ক ও মহাসড়কেরই সওজের উদাসীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে প্রায়ই সড়কে প্রাণ ঝরছে। এতকিছুর পরও কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতা দুঃখজনক।


logo

প্রকাশকঃ মোঃ সাদ্দাম হোসেন