সরকারি হাসপাতালে ২১৪ জনের জন্য একটি টয়লেট
১১ জুন, ২০২৪, 5:37 PM
NL24 News
১১ জুন, ২০২৪, 5:37 PM
সরকারি হাসপাতালে ২১৪ জনের জন্য একটি টয়লেট
ঢাকাঃ অবকাঠামোগত দিক থেকে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালগুলোর টয়লেট ব্যবহার উপযোগী হলেও এর বেশির ভাগই অপরিচ্ছন্ন। রোগীর তুলনায় টয়লেটের অপর্যাপ্ততা এর অন্যতম প্রধান কারণ। গবেষণা বলছে, সরকারি হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে প্রতি একটি টয়লেটের বিপরীতে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২১৪ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে টয়লেটপ্রতি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯৪ জন।
ঢাকার ১২টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। গবেষণায় ২ হাজার ৪৫৯টি টয়লেট পর্যবেক্ষণ করে ঢাকার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা, ব্যবহার উপযোগিতা এবং পরিচ্ছন্নতা মূল্যায়ন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনি এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় গবেষণাটি করা হয়। গবেষণাটি সম্প্রতি প্লাস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে টয়লেট নির্মাণের ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা ওয়াটারএইড প্রণীত নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতি ২০ থেকে ২৫ জন রোগী বা পরিচর্যাকারীর জন্য প্রথম ১০০ জনের ক্ষেত্রে একটি করে টয়লেট এবং অতিরিক্ত প্রতি ৫০ জন রোগী বা পরিচর্যাকারীর জন্য একটি অতিরিক্ত টয়লেট থাকতে হবে। কিন্তু আইসিডিডিআর,বির গবেষণায় ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে।
গবেষণায় বলা হয়, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো বাংলাদেশ জাতীয় ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন) স্ট্যান্ডার্ড ও বাস্তবায়ন নির্দেশিকা ২০২১ অনুযায়ী অন্তর্বিভাগে প্রতি ছয়টি বেডের জন্য একটি টয়লেট মানদণ্ড পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের ৬৮ শতাংশ টয়লেট অবকাঠামোগত দিক বিবেচনায় ব্যবহার উপযোগী হলেও ৬৭ শতাংশই অপরিচ্ছন্ন। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর ৯২ শতাংশ টয়লেট ব্যবহার উপযোগী হলেও পরিচ্ছন্ন ৫৬ শতাংশ। হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে রোগীদের জন্য টয়লেটের সাপেক্ষে ব্যবহারকারীর অনুপাতও বেশি।
সরকারি হাসপাতালের ভর্তি রোগীর ক্ষেত্রে প্রতিটি টয়লেটের বিপরীতে ব্যবহারকারী ১৭ জন এবং বেসরকারি হাসপাতালে এই সংখ্যা ১৯ জন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদা টয়লেট সুবিধা পাওয়া গেছে ১ শতাংশের কম স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে। মাত্র ৩ শতাংশ হাসপাতালে মাসিকের সময় ব্যবহৃত প্যাড এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ময়লা ফেলার ঝুড়ি ছিল।
আইসিডিডিআর,বির অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট এবং এই গবেষণার প্রধান তদন্তকারী ডা. মো. নুহু আমিন বলেন, ঢাকার হাসপাতালগুলোর প্রকৃত স্যানিটেশন পরিস্থিতি আমরা যা দেখছি তার চেয়েও খারাপ হতে পারে। কারণ আমরা গবেষণাটি করেছিলাম কোভিড-১৯ মহামারীর ঠিক পরে। তখন রোগীর প্রবাহ এবং টয়লেট ব্যবহার কম হয়েছে। নুহু আমিন হাসপাতালে পরিচ্ছন্ন ও কার্যক্ষম টয়লেট বজায় রাখতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং লিঙ্গভিত্তিক প্রয়োজনীয়তা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদার ওপরও গুরুত্ব দিতে বলেন।