ঢাকা ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
রাশিয়ার বহুতল ভবনে ৯/১১-র ধাঁচে ড্রোন হামলা! গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা প্রকাশ নির্বাহী অফিসারের বদলী প্রত্যাহার দাবীতে মানববন্ধন বৈষম্যহীন নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারে মহান বিজয় দিবস উদযাপন শাহরুখ খানকে নিয়ে ‘অস্বস্তিতে’ পাকিস্তানি অভিনেত্রী মাহিরা আত্মহত্যায় প্ররোচনা: জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জাপানের কিভাবে রাশমিকা মান্দানা সৌন্দর্য্য ধরে রেখেছেন তালতলীতে গনঅধিকার পরিষদের আহবায়ক কমিটি ঘোষনা বরগুনায় কৃষক দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

সর্বব্যাপী দুর্নীতি, অরক্ষিত ব্যাংক খাত

#

১১ জুন, ২০২৪,  5:49 PM

news image

- কালো টাকার সঞ্চালন ও পুঁজি পাচার হচ্ছে অবাধে : ড.ওয়াহিদউদ্দিন
- ঋণখেলাপি এখন নতুন বিজনেস মডেল : ড. সালেহ উদ্দিন
- দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে : ড. হোসেন জিল্লুর
- ব্যাংক খাতের জন্য শ্বেতপত্র দরকার : ড. আহসান মনসুর


দেশে এখন সর্বব্যাপী দুর্নীতি, ব্যাংক খাত নিয়ন্ত্রণহীন ও অরক্ষিত। প্রশাসনের সব স্তর জবাবদিহিতার অভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ভরা। এর ফলে সরকারি ব্যয় সাশ্রয়ের বদলে হচ্ছে ব্যাপক অপচয়। বিপুল ঋণ করে তৈরি করা হচ্ছে বাজেট। এ পরিস্থিতিতে বাজেট একটি ঋণের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে। এ কথাগুলো বলেছেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেছেন, সাবেক আইজিপির শত শত কোটি টাকা ব্যাংকে জমা হলো, আবার রাতারাতি উধাও হয়ে গেল। তা হলে এই টাকাগুলোর পদচিহ্ন কোথায় গেল। ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভাগের কাজ এখানে কী ছিল।


গতকাল সোমবার নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘অর্থনীতির চালচিত্র ও প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে এখন বিজনেসের নতুন মডেল হয়েছে আর তা হচ্ছে ঋণখেলাপি মডেল। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, দুর্নীতি এখন একটা প্রাতিষ্ঠানিক চরিত্রে রূপ নিয়েছে। সব দেশেই দুর্নীতি হয় কিন্তু এখানে যা হচ্ছে তাতে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকতা পেয়ে গেছে।


রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নোয়াবের সভাপতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দৈনিক সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, সাবেক অর্থসচিব ও সিজিএ মুসলিম চৌধুরী, যুগান্তরের প্রকাশক সালমা ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।

বাজেট এখন সেক্রিফিসিয়ার ল্যাম্ব : ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ
আলোচনায় অংশ নিয়ে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ব্যাংক খাতে বিশৃঙ্খলা এমন পর্যায়ে এসে পড়েছে যে, অর্থনীতির সবচেয়ে সংবেদনশীল জায়গায়টি এখন নিয়ন্ত্রণহীন ও অরক্ষিত অবস্থায়। বিনিয়োগের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ এখনো করতে পারিনি। অর্থনীতিতে যে আস্থার পরিবেশ সেটা তো তৈরিই হয়নি বরং প্রশাসনের সব স্তরে জবাবদিহিতার অভাব, অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে সরকারি ব্যয়সাশ্রয়ের বদলে হচ্ছে ব্যাপক অপচয়। তিনি বলেন, মানিলন্ডারিং রোধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সহযোগী বিভাগ হিসাবে ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট বলে একটি তৈরি করা হয়েছে, যার কাজ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি করা, আমরা সেটাকেও কাজে লাগাতে পারিনি। যার কারণে অর্থনীতিতে অবাধে কালো টাকার সঞ্চালন আর বিদেশে পুঁজি পাচার হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আমাদের সাবেক আইজিপি (বেনজীর আহমেদ) সাহেবের ব্যাপারে একটি সংবাদ এসেছে, হাজার হাজার কোটি, শত শত কোটি টাকা ব্যাংকে জমা হচ্ছে, আবার রাতারাতি ব্যাংক থেকে তা উধাও হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী এত টাকা কোথায় থেকে আসছে অথবা কোথায় যাচ্ছে তা লিপিবদ্ধ করতে হয়। আর ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যে কথা বললাম তাতে ১০ লাখ টাকার ওপরে লেনদেন হলে সেখানে ধরা পড়ে। তা হলে এই টাকাগুলোর পদচিহ্ন কোথায় গেল। সেগুলোর দিকে আমরা তাকাচ্ছি না কেন? অথবা তাকানো যাচ্ছে না কেন?
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, অব্যাহত মুদ্রাস্ফীতি ও বৈদেশিক রিজার্ভের পতন, রাজস্ব সংগ্রহের স্বল্পতা, রফতানি ও রেমিট্যান্সপ্রবাহের স্থবিরতা, পুঁজিবাজার ও ব্যাংক খাতের বিশৃঙ্খলা, সর্বব্যাপী দুর্নীতি এবং সরকারি ব্যয়ের অনিয়ম, অপচয়, জবাবদিহিতা না থাকার সংস্কৃতি, বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধে বর্তমান দায় এসব এখনকার বাস্তবতা। এ পরিস্থিতির সীমাবদ্ধতার মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটকে এক হিসেবে বলা যায়, বাস্তবসম্মত, আবার অন্যভাবে বলা যায় যূপকাষ্ঠে বাঁধা বলির পশুর মতো। যা ইংরেজিতে বলে ‘সেক্রিফেসিয়াল ল্যাম্ব’ যার হাত-পা থাকে বাঁধা, যার নড়াচড়া করার খুব সুযোগ নেই। এরপর তিনি হেসে বলেন, আমি বাজেটের কথা বলছি, অর্থমন্ত্রীর কথা বলছি না, কারণ খুব কম সময়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন।

ভর্তুকি বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের কৃতকর্মের জন্য বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে। সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ায় বেসরকারি খাত ঋণ নেয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর মধ্যে যদি খেলাপি ঋণও আবার বেড়ে যায় তা হলে নতুন ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। এ ক্ষেত্রে বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অবাস্তব বলা যায়। এমন পরিস্থিতিতে আপাতদৃষ্টিতে একটি ন্যূনতম আকারের বাজেট দিতে গেলেও কিছু জোড়াতালি, অসঙ্গতি ও অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা তো থাকবেই। কারণ অর্থনীতি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে বাজেট ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্পই সুখকর হবে না। এটা মেনে নেয়াই ভালো। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে তা মেনে নেয়া হয়নি। পুরো বাজেটে একটা আশাব্যঞ্জক ভাব রয়ে গেছে। সমস্যা হলো প্রস্তাবিত বাজেটে যদি সাময়িক সময়ে অর্থনৈতিক টানাপড়েন হতো তা হলে কথা ছিল না।


ড. ওয়াহিদ উদ্দিন বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটানোর জন্য দেশী-বিদেশী প্রচুর ঋণ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এর সুদ পরিশোধ করতেই ঋণের অর্ধেক খরচ করতে হবে। এই অবস্থা আমরা পুরো দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছি কি না তা বলতে পারি না, কিন্তু বাজেট একটি ঋণের ফাঁদে পড়তে পারে। সেটার একটি সঙ্কেত বা অশনিসঙ্কেত এখনই দেখা যাচ্ছে।

সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি এই পর্যায়ে গেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি এমন একটা বিষয় যার বিরুদ্ধে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে তা একেবারে ‘গেড়ে’ বসে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বাসযোগ্য নীতি দরকার।


বাজেটে ব্যক্তি-শ্রেণীর আয়করমুক্তসীমা অপরিবর্তিত রাখাকে ‘অবিবেচনাপ্রসূত’ অভিহিত করে অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, এখন যে মূল্যস্ফীতি তার জন্য এই সীমা বাড়ানো দরকার। কারণ এই মূল্যস্ফীতি এখনই কমবে না, আগামী এক বছরেও তা কমবে কি না সন্দেহ রয়েছে। তিনি মোবাইল ইন্টারনেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সমালোচনা করে বলেন, এর ফলে মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার কমিয়ে দিলে তাতে রাজস্ব আয় বাড়বে না।

খেলাপি ঋণ এখন একটি বিজনেস মডেল : ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ
ধারদেনা করে বাজেট তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, একটি এডিপি হাতে নেয়া হয়েছে যার আকার আবার দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। ঋণ করে তা বাস্তবায়ন করা হবে। এটিতে ১১-১২ শ’ প্রকল্প রয়েছে, যার মধ্যে অনেক প্রকল্প আবার অপ্রয়োজনীয়, আবার অনেকগুলো কখনোই বাস্তবায়ন হবে না। আমার পরামর্শ হলো এডিপির আকার এক থেকে দেড় লাখ কোটি টাকা করা। এতে ঘাটতি কমে যাবে, ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া লাগবে না।


মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ ও জ্বালানিকে তিনি বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই প্রশাসন দিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা যাবে না। এখানে জবাবদিহিতা নাই, মনিটরিং নাই। সরকারি অফিসে সকালে আসেন, চেয়ারে তোয়ালে বেঁধে পুঁজিবাজারে গিয়ে ঘোরাঘুরি করেন। তারা তো জানেন, কাজ না করলেও মাস শেষে বেতন ঠিকই পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর অপ্রয়োজনীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ করেন।
খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি এখন বিজনেস মডেল হয়ে গেছে, খেলাপি ঋণ মডেল হলো ঋণ নিবো কিন্তু শোধ করবো না।

দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে : ড. হোসেন জিল্লুর
আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেট প্রণয়নে অর্থমন্ত্রী তিন শ্রেণীর কথা শুনেছেন। প্রথমত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফের কথা শুনেছেন অর্থমন্ত্রী। আইএমএফ বলেছে, এবার বেশি উচ্চাকাক্সক্ষী বাজেট করা যাবে না। কারণ, সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতিও থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, তিনি অলিগার্ক বা অভিজাত গোষ্ঠীর কথা শুনেছেন। তৃতীয়ত, এবারের গতানুগতিক বাজেট দেখে মনে হচ্ছে, অর্থমন্ত্রী আমলাদের কথা শুনেছেন। আমলাদের সুযোগ-সুবিধার যেন কমতি না হয়। তবে কার কথা শোনেননি অর্থমন্ত্রী এমন ব্যাখ্যা দিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর বলেন, এই দুই শ্রেণী হলো পরিশ্রমী উদ্যোক্তা ও পরিশ্রমী কর্মী।
তিনি বলেন, ক্ষমতার প্রশ্রয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছেন যারা সেই শ্রেণীর কথা চিন্তা করেই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। আবার এই বিশেষ শ্রেণীর কথা চিন্তা করে অর্থনীতিতে সংস্কার ও ব্যাংক খাত নিয়ে তেমন আলোচনা করা হয়নি।


অর্থনীতিতে বিদ্যমান সঙ্কটগুলো মোকাবেলায় কী ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে আলোকপাত করে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির ভঙ্গুরতা মোকাবেলায় বাজেটের আকার কিছুটা কমানো হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ে প্রায় সবাই সঙ্কটে আছেন। কিন্তু মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার বাজেটের লক্ষ্যটি কাগুজে লক্ষ্য ছাড়া আর কিছু নয়। মূল্যস্ফীতি কমানোর কোনো কৌশল তাতে নেই। কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায়ও বাজেটে তেমন বিশ্বাসযোগ্য কর্মকৌশল নেই।


সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আরো বলেন, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ স্থবির হয়েছে। এ দেশের বিনিয়োগকারীরা পরিশ্রম করতে রাজি আছেন। কিন্তু আস্থার পরিবেশের অভাব আছে। বাজেটে সৎ করদাতাদের জন্য ৩০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। আর কালো টাকার জন্য ১৫ শতাংশ কর নির্ধারণ করা হয়েছে। মোটরসাইকেলে কর বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু ইউএনওদের বিলাসবহুল গাড়ির সুবিধা কমানো হয়নি।

ব্যাংক খাতের জন্য শ্বেতপত্র দরকার : আহসান এইচ মনসুর

পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা আমরা নিজেরাই তৈরি করেছি। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য রাজনৈতিক ইচ্ছে আছে কি না সেটা আগে ঠিক করতে হবে। মূল্যস্ফীতি কমানো বাজেটের কাজ নয়। বাজারভিত্তিক সুদহার আরো আগে করা দরকার ছিল। এটা করতে দেরি হয়ে গেছে। সুদ বেড়ে গেছে। এটা ব্যবসার জন্য ভালো নয়। তবে এটাকে মেনে নিতে হবে। এতে এক্সচেঞ্জ রেট কমবে।


তিনি বলেন, ব্যাংক খাত নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। এ দুরবস্থা কেন হলো এর জন্য একটা শ্বেতপত্র বের করা দরকার। এর জন্য দরকার পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। এর মূল কারণ হচ্ছে ব্যাংকিং খাত আমরা ধ্বংস করেছি। এটাতে কারেকশন করতেই হবে। একটা খাতের ব্যর্থতা সরকারকে আজকে দেউলিয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সেটা হলো ট্যাক্স জিডিপি রেশিও। এটাকে বাড়াতেই হবে। সরকার তার নীতি পরিচালনায় স্মার্ট হোক। জনগণ কেন কর দেবে যেখানে একটা সার্ভিস নিতে আবার ওপরি দিতে হয়। বিদ্যুৎ খাতকে সরকার যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছে বলে মনে করেন আহসান মনসুর। তার মতে, ‘বিদ্যমান ক্যাপাসিটি চার্জ ও ভর্তুকি বজায় রেখে বেশি দূর এগোনো যাবে না। ভারতের আদানি গ্রুপ হোক বা দেশের সামিট গ্রুপই হোক, আমি মনে করি, এদের সাথে আবার দরকষাকষি করতে হবে। এভাবে ব্যয় সাশ্রয় করা সম্ভব।’ ব্যাংক খাত নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবার পরামর্শ দিয়ে আহসান মনসুর বলেন, ব্যাংক খাত থেকে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। সরকার টাকা পাচ্ছে না, ব্যবসায়ীরাও পাচ্ছেন না। কেন পাচ্ছেন না? এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী কারা? আহসান মনসুর বলেন, ব্যাংক একীভূতকরণের চেষ্টা দেখা গেলেও রাজনৈতিক অর্থনীতির চাপে তা মুখ থুবড়ে পড়ে গেল।

কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব বাজেটে পাস হতে পারে না: এ কে আজাদ
সংসদ সদস্য, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সমকালের প্রকাশক একে আজাদ বলেছেন একজন ব্যবসায়ী কর দেবেন ৩০ শতাংশ আর একজন কালোবাজারি কর দেবেন ১৫ শতাংশ এমন তুঘলকি কাণ্ডের অনুমোদন দেয়ার জন্য জনগণ আমাকে ম্যান্ডেট দেয়নি। এটা আমি সংসদেও বলব। বাজেটের এমন নিয়ম সংসদে পাস হতে পারে না।

logo

প্রকাশকঃ মোঃ সাদ্দাম হোসেন