চীনা ও কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য নিয়মিত প্রাতঃরাশ সভা
অনলাইন ডেস্ক
০৮ এপ্রিল, ২০২৫, 10:40 PM

অনলাইন ডেস্ক
০৮ এপ্রিল, ২০২৫, 10:40 PM

চীনা ও কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য নিয়মিত প্রাতঃরাশ সভা
বাংলাদেশে বিনিয়োগকে আরও সহজ, স্বচ্ছ ও দ্রুততর করতে চীনা ও দক্ষিণ কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য মাসিক প্রাতঃরাশ সভার আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় চীনের বিনিয়োগ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ উদ্যোগের কথা জানান।
ড. ইউনূস জানান, এই সভার উদ্দেশ্য হলো—বিদেশি বিনিয়োগকারীদের যেকোনো ধরনের উদ্বেগ ও প্রতিবন্ধকতা সরাসরি শোনা এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের পথ বের করা। “গত আট মাসে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করেছি। এত অনুকূল পরিবেশ এর আগে কখনো ছিল না,” বলেন তিনি।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান প্রতি মাসের ১০ তারিখে এই প্রাতঃরাশ সভা আয়োজন করবেন। সভায় অংশগ্রহণ করে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ শোনার পাশাপাশি বেশ কিছু সভায় সরাসরি উপস্থিত থাকবেন ড. ইউনূস নিজেও।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ হটলাইন ও কল সেন্টার চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন ড. ইউনূস। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং দ্রুত পদক্ষেপের নিশ্চয়তা পাবেন। “আমরা চাই, কেউ যেন বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা বোধ না করেন। হটলাইন থাকলে সমস্যাগুলো বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগীভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে,” বলেন তিনি।
এই বৈঠকে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, টেক্সটাইল, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, মোবাইল টেলিকম, তথ্যপ্রযুক্তি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং লজিস্টিকস খাতের অন্তত ৩০ জন বিশিষ্ট চীনা বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।
ড. ইউনূস বৈঠকে সম্প্রতি বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সাক্ষাতের কথা জানান। তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট শি বাংলাদেশে চীনা কোম্পানির আরও ব্যাপক বিনিয়োগ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছেন। তার আন্তরিকতা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে।”
চীনা কোম্পানিগুলো চট্টগ্রামের চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মোংলায় পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এছাড়া, চীন মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, ‘বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদন কেন্দ্র’ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান সুসংহত করতে সরকার নীতিগত সহায়তা জোরদার করছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ শুধু নিজের অভ্যন্তরীণ বাজারই নয়, নেপাল ও ভুটানের মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতেও পণ্য সরবরাহের সুযোগ তৈরি করছে।”
বড় কিছু চীনা কোম্পানি ইতিমধ্যে বৈদ্যুতিক যানবাহন রূপান্তর, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন, উইন্ড টারবাইন এবং অফশোর সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
দিনের শুরুতেই একাধিক দক্ষিণ কোরিয়ান বিনিয়োগকারী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। তারাও বাংলাদেশে আরও বিস্তৃতভাবে বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানান।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ।